WB Primary Tet Teachers Recruitment 2024: রাজ্য সরকারের প্রাথমিক থেকে শুরু করে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার বেহাল অবস্থা। কোন স্কুলে প্রচুর ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে তো শিক্ষক নেই, আবার বেশ কিছু স্কুল এমন রয়েছে যেখানে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যায় বেশি তো সেই অনুপাতে শিক্ষক নেই। এই অবস্থায় সরকারি ইস্কুল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে অধিকাংশ অভিভাবক। পশ্চিমবঙ্গ যেহেতু কৃষি নির্ভর রাজ্য ফলে অধিকাংশ গ্রামের ছেলে মেয়েরা শিক্ষার সুব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে আন্দোলন (WB Primary TET Teachers Recruitment 2024)
এই নিয়ে অবশ্য বুদ্ধিজীবীদের কোন মাথাব্যথা নেই। তবে একাধিক সময় হবু শিক্ষকেরা স্কুল গুলোর হাল ফেরাতে এবং নতুন শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে আন্দোলনে সামিল হয়েছে। আন্দোলনকারীদের বারবার সরকার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সরকারের সদ ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও নতুন শিক্ষক নিয়োগের পথে এগোতে পারছে না। এর অন্যতম প্রধান কারণ কোর্ট কেস। প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ হোক অথবা উচ্চমাধ্যমিক সকল স্তরে শিক্ষক নিয়োগের ভুঁড়িভুড়ি দুর্নীতির অভিযোগে একাধিক কেস জমা পড়েছে। সেই কারণে সরকার চাইলেও নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যেতে পারছে না।
প্রাথমিকে সাম্প্রতিক শিক্ষক নিয়োগ (WB Primary Teachers Recruited)
সাম্প্রতিক ২০১৭ প্রাইমারি টেট পাস চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়েছে। এবার ২০২২ টেট পাস চাকরি প্রার্থীদের নিয়োগের জন্য সরকার নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত করতে চলেছে। ২০২২ স্টেট পাশ চাকরিপ্রার্থীরা নিয়োগের দাবিতে আন্দোলনে বারবার শামিল হয়েছে। সভাপতি তরফে তাদের বারংবার জানানো হয়েছে ২০১৭ প্রাইমারি টেট পাস চাকরি প্রার্থীদের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হলেই তাদের নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হবে।
বর্তমানে ২০১৭ এর টেট পাস চাকরি প্রার্থীদের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। তাই আগামীতে খুব দ্রুত ২০২২ টেট পাস চাকরি প্রার্থীদের নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হতে চলেছে। অন্যদিকে বিগত ৮ বছর ধরে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে না। ইতিমধ্যেই স্কুল গুলি শিক্ষকের অভাবে ধুকছে। এই নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছে, বর্তমানে উচ্চ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক নিয়োগ সুপ্রিম কোর্ট কেস চলছে। এই কেস রায় আসলেই দ্রুত নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হবে। তবে এর আগেও শিক্ষামন্ত্রী এইরকম বহু প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যার ফল আগামী তিন থেকে চার বছরেও চাকরি প্রার্থীরা পায়নি।
এছাড়াও শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন বর্তমান সরকারের আমলে পূর্বের তুলনায় শিক্ষক নিয়োগের ঘাটতি অনেক কমেছে। তার হিসাব মতে ২০১১ সালের আগে রাজ্যে যে পরিমাণ শিক্ষক কর্মরত অবস্থায় ছিল বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশি শিক্ষক কর্মরত অবস্থায় রয়েছেন। তাই চলুন ২০১১ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগের পরিসংখ্যান একবার দেখে নেওয়া যাক।
বর্তমানে শিক্ষক ও শিক্ষিকার পরিসংখ্যান দেখেনিন ( WB Teachers)
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, উচ্চ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় মিলিয়ে ২০১১-১২ সালে যেখানে মোট শিক্ষকের সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ৬৭ হাজার ৪৮২ জন, সেখানে ২০২২-২৩ সালে এই শিক্ষকের পরিমাণ কমে হয়েছে ১ লক্ষ ৬৪ হাজার ৭৭১ জন। একই সময় সীমার মধ্যে অর্থাৎ ২০১১-১২ সালে উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্তরের শিক্ষকের সংখ্যা ২৪ হাজার ৭০৪ জন ছিল যা ২০২২-২৩ সালে কমে হয়েছে ২৪ হাজার ২০১ জন। তবে বর্তমানে প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলির ক্ষেত্রে শিক্ষকের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। ২০১১-১২ সালে প্রাথমিক স্তরে শিক্ষকের সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ৯০ হাজার ৭০৪ জন যা ২০২২-২৩ সালে বেড়ে হয়েছে ২ লক্ষ ৬ হাজার ৩৮৪ জন। তবে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে শিক্ষকের বেশ ঘাটতি রয়েছে। বহু বিদ্যালয় শিক্ষকের অভাবে ছাত্র ভর্তি নিতে পারছে না। সাম্প্রতিক বাংলার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেছেন, ২০১৭ সালের টেট পাশ দের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ করা হল, আবার পুনরায় ২০২২ ও ২০২৩ টেট পাশ দের জন্য দ্রুত শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে।